প্র্যাক্টিসিংমুসলিম

হোম
ক্যালেন্ডারইভেন্টসযোগাযোগ
+8801824262003
practicingmuslim@gmail.com
ফলো করুন :
1

কোরআন শিক্ষার গুরুত্ব ও ফজিলত

"মানুষকে সঠিক পথ দেখানোর জন্য আল্লাহ তায়ালা যুগে যুগে অসংখ্য নবী-রাসূল পাঠিয়েছেন। এসকল নবী -রাসূলদেরকে গাইডবুক হিসেবে সহীফা ও কিতাব দিয়েছেন। এসব কিতাব সমূহের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ কিতাব হচ্ছে আল-কোরআন। পূর্ব পূবর্বর্তী কিতাবসমূহের উপরে ঈমান আনা এবং আল-কোরআনকে মেনে চলা মুসলিমদের উপরে আল্লাহ তায়ালা ফরজ করেছেন। আল-কোরআন এসেছে বিশ্ব মানবতাকে হিদায়াতের সঠিক পথের সন্ধান দেয়ার জন্য। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘রমযান মাস, যাতে কোরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের হিদায়াতস্বরূপ এবং হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদের্শনাবলী ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে।’ (সূরা আল-বাকারা-১৮৫) হিদায়াতের এই কিতাব আল -কোরআন শিক্ষা করা প্রত্যেক মুসলমানের উপরে ফরজ করা হয়েছে। নিম্নে আল-কোরআন শিক্ষা করার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কেআলোচনা করা হলো আল-কোরআন শিক্ষা করা ফরজ আল-কোরআনের প্রথম বাণী হচ্ছে, ‘পড় তোমার প্রভুর নামে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন।’ (সূরা আলাক-১) এখানে ইক্বরা, অর্থ: পড়ো। এ আয়াতের মাধ্যমে প্রত্যেক মুসমুলিমকে আল্লাহ জানিয়ে দিলেন তোমরা যিনার জন্য, বোঝার জন্য এবং সঠিকটা মেনে চলার জন্য পড়া-লেখা করো, অধ্যয়ন করো। অর্থাৎ জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমানদের জন্য আল্লাহ তায়ালা ফরজ করে দিয়েছেন। আর এটার বাস্তব নির্দেশ দিয়েছেন রাসূল (সা.)। আল-হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলসূ (সা.) বলেছেন, জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমানের উপরে ফরজ।’ (সূনান ইবনে মাজা) জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি আল-কোরআন শিক্ষা করাও প্রত্যেক মুসলমানের উপরে আল্লাহ ফরজ করে দিয়ে ছেন। রাসূল (সা.) এ সম্পর্কে মুসলমানদেরকে নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলসূ (সা.) বলেছেন, তোমরা কোরআন ও ফারায়েজ (উত্তরাধিকার আইন) শিক্ষা করো এবং মানুষদেরকে শিক্ষা দাও কেননা আমাকে উঠিয়ে নেয়া হবে।’ (সূনা সূ ন আত-তিরমিযি) তাই, আমাদের উপরে কর্তব্য আল-কো রআন ও ইলমে ফারায়েজ (উত্তারাধিকার আইন) শিক্ষা করা এবং এর আলোকে জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্র পরিচালনা করা। আল-কোরআন শিক্ষা সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত আল-কোরআন অধ্যয়ন করা, কোরআন জানা-বোঝার চেষ্টা করা পৃথিবীর সকল কাজের মধ্যে শ্রেষ্ঠ কাজ। কারণ এ কো রআনের মধ্যে রয়েছে মানুষের জীবন পরিচালনা পদ্ধতি, হিদায়াতের সঠিক পথ। প্রত্যেক কাজ শুরু করার সময় রাসূল (সা.) বিসমিল্লাহ পড়ে (আল্লাহর নাম নিয়ে) শুরু করার কথা বলে ছেন। তবে যেকোনো কাজ শুরু করার আগে ‘আউযুবিযু ল্লাহি মিনাশ শাইতারিজ রাজীম’ অর্থাৎ শয়তা নের কুমন্ত্রণা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতে বলেননি। তবে একটি কাজ করার আগে স্বয়ং আল্লাহ তাআলা শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতে বলেছেন, সেটা হলো আল-কোরআন তিলাওয়াত বা অধ্যয়নের সময়। এ সম্পর্কে আল-কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘সুতরাং যখন তুমি কোরআন পড়বে তখন আল্লাহর কাছে বিতাড়িত শয়তান হতে পানাহ চাও।’ (সূরা আন-নাহল-৯৮) হাদিস হতে কিছু কথাঃ- রাসুলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- خَيْرُكُمْ مَنْ تَعَلَّمَ الْقُرْاٰنَ وَعَلَّمَهٗ ‘যে কুরআন শরীফ শিক্ষা করে ও শিক্ষা দেয় সে-ই তোমাদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।’ বুখারী মুসলিম শরীফে আছে : اَفَلَا يَغْدُوْا اَحَدُكُمْ اِلٰى الْمَسْجِدِ فَيَتَعَلَّمُ مِنْ كِتَابِ اللهِ اٰيَتَيْنِ خَيْرٌ لَّهُ مِنْ نَاقَتَيْنِ وَثَلَاثٌ خَيْرٌلَّهُ مِنْ ثَلِاثٍ وَاَرْبَعٌ خَيْرٌلَّهُ مِنْ اَرْبَعٍ وَمِنْ اَعْدَادِهِنَّ مِنَ الْاِبِلِ. “তোমাদের মধ্যে কেহ মসজিদে গিয়ে কুরআনের দুইটি আয়াত কেন শিক্ষা লাভ করে লয় না? কুরআনের দুইটি আয়াত শিক্ষা করা দুইটি উট অপেক্ষা অধিক ভাল। এইরূপে তিনটি আয়াত তিনটি উট অপেক্ষা এবং চারটি আয়াত চারটি উট অপেক্ষা অধিক ভাল। এমনিভাবে যত সংখ্যক আয়াত হবে, তত সংখ্যক উট হতে অধিক ভাল।” আল-কোরআনের এ বক্তব্য থেকে জানা যায়, শয়তান সকল কাজেই বান্দা কে কুমন্ত্রণা দেয়। তবে কোরআন অধ্যয়নের সময় শয়তান সবচেয়ে বেশি কুমন্ত্রণা দিয়ে মনোযোগ নষ্ট করার চেষ্টা করে। কোরআনের কথা যেন মানুষ বুঝতে না পারে, সে জন্য শয়তান শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করতে থাকে। মুসলমানরা কোরআন থেকে দূরে সরে থাকলে শয়তান বেশি খুশি হয়। এজন্যই আল্লাহ তায়ালা কোরআন অধ্যয়নের সময় শয়তান থেকে আশ্রয় চাওয়ার কথা বলেছেন। এজন্য আমাদের উচিত আল- কোরআন জানা ও বোঝার জন্য সবচেয়ে বেশি চেষ্টা করা। আল-কোরআন হিদায়াতের একমাত্র কিতাব আল-কোরআন হচ্ছে বিশ্ব মানবাতার জন্য হিদায়াতের একমাত্র কিতাব। এই কোরআনই বিশ্বের সকল মানুষকে সঠিক পথের সন্ধান দিতে পারে, হিদায়াতের আলোয় আলোকিত করতে পারে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয় এ কোরআন এমন একটি পথ দেখায় যা সবচেয়ে সরল এবং যে মুমিনগণ নেক আমল করে তাদেরকে সুসংবাদ দেয় যে, তাদের জন্য রয়েছে মহাপুরপুস্কার। আর যারা আখিরাতে ঈমান রাখে না আমি তাদের জন্য প্রস্তুত করেছি যন্ত্রণাদায়ক আযাব।’ (সূরা বনি ইসরাইল- ৯-১০) ‘অবশ্যই তোমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে আলো ও স্পষ্ট কিতাব এসেছে। এর মাধ্যমে আল্লাহ তাদেরকে শান্তির পথ দেখান, যারা তাঁর সন্তুষ্টির অনুসরণ করে এবং তাঁর অনুমতিতে তিনি তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করেন। আর তাদেরকে সরল পথের দিকে হিদায়াত দেন।’ (সূরাআল-মায়েদা- ১৫-১৬) আল-কোরআন ছাড়া অন্য কারো কাছে হিদায়াত অন্বেষণ করা যাবে না। কেউ এটা করলে আল্লাহ নিজে তাকে গুমরাহ করে দিবেন। এ সম্পর্কে আল-হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘যে ব্য ক্তি কোরআন ছাড়া অন্য করো কাছে হিদায়াত চাইবে, আল্লাহ তা কে পথভ্রষ্ট করে দিবেন।’ (সূনান আত-তিরমিযি) অতএব, আমাদের জীবন চলার পাথ ইসলামকে সঠিকভাবে জানার জন্য হিদায়াতের একমাত্র কিতাব আল-কোরআন শিক্ষা অব্যাহত রাখতে হবে। কুরআন শরীফের আয়াত উট অপেক্ষা অধিক ভাল, ইহা বুঝতে বেশী কিছু চিন্তার দরকার হয় না। কারণ, উট তো একমাত্র দুনিয়াতেই কাজে আসে, আর কুরআনের আয়াত দুনিয়া ও আখেরাত দু-জাহানে কাজে আসে। এখানে উটকে উদাহরণ স্বরূপ বর্ণনা করা হয়েছে। কেননা, আরব দেশের লোকেরা উটকেই বড় সম্পত্তি মনে করে, নতুবা একটি আয়াতের পরিবর্তে সমগ্র বিশ্বেরও কোন মূল্য হয় না। এই হাদীস দ্বারা এই উপদেশ লাভ করা যায় যে, সমস্ত কুরআন শরীফ না পড়তে পারলেও যতটুকু পড়–ক না কেন ততটুকুতেই বড় ফযীলত ও অতি বড় নেয়ামত। হাদীসে আছে- اَلْمَاهِرُ بِالْقُرْاٰنِ مَعَ السَّفَرَةِ الْكِرَامِ الْبَرَرَةِ وَالَّذِىْ يَقْرَأُ الْقُرْاٰنَ وَيَتَتَعْتَعُ وَهُوَ عَلَيْهِ شَاقٌّ لَّهٗ اَجْرَانِ. بخارى ‘যে ব্যক্তি স্পষ্টভাবে অনায়াসে কুরআন শরীফ পড়তে পারে সে ব্যক্তি ঐ সমস্ত ফেরেশতাদের সঙ্গী হবে, যাঁরা বড়ই পবিত্র, বড়ই সম্মানী এবং যারা লোকের আমলনামা লিখেন। আর যে ব্যক্তি কুরআন শরীফ পড়ে, কিন্তু মুখে বাধবাধ ঠেকে এবং বড়ই কঠিন বোধ করে, সে-ও দ্বিগুণ সওয়াব পাবে।’ দ্বিগুণ সওয়াবের কারণ এই যে, শুধু পাঠ করার জন্য এক সওয়াব পাবে, আর পড়ার সময় কষ্টের কারণে যে বিরক্ত হয়ে পড়া ক্ষান্ত না করে পড়তে থাকে, তজ্জন্য আর একটি সওয়াব পাবে। -বুখারী শরীফ যে ব্যক্তি কুরআন শরীফ ভালমত পাঠ করতে না পারা সত্তে¡ও বিরক্ত হয়ে পাঠ ছেড়ে দেয় না, তার জন্য এই হাদীস কত বড় খোশখবরী (সুসংবাদ) দেওয়া হয়েছে যে, তাকে দ্বিগুণ সওয়াব দেওয়া হবে। অন্য হাদীসে আছে- اِنَّ الَّذِىْ لَيْسَ فِىْ جَوْفِه شَىْءٌ مِّنَ الْقُرْاٰنَ كَالْبَيْتِ الْخَرِبِ. ترمذي ‘যাহার সিনার মধ্যে (অন্তরে) একটুও কুরআন নাই, সে যেন একখানা উজাড় ঘর।’ -তিরমিযী কোনো মুসলমানের অন্তরই কুরআন শূণ্য থাকা চাই না। হাদীসে আছে- مَنْ قَرَأَ مِنْ كِتَابِ اللهِ فَلَهٗ بِهِ حَسَنَةٌ وَالْحَسَنَةُ بِعَشْرِ اَمْثَالِهَا لَا اَقُوْلُ الۤمۤ حَرْفٌ بَلْ اَلِفٌ حَرْفٌ وَلَامٌ حَرْفٌ وَمِيْمٌ حَرْفٌ . ترمذي ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর কিতাব) কুরআন শরীফের একটি অক্ষর পড়ে, সে একটি নেকি পায়, আর প্রত্যেক নেকি দশ নেকির সমান (এই হিসাবে প্রত্যেক অক্ষরে দশ নেকি করে পাওয়া যায়)। আমি এ কথা বলি না যে, ‘আলিফ-লাম-মীম’ এক অক্ষর; বরং ‘আলিফ’ এক অক্ষর, ‘লাম’ এক অক্ষর এবং ‘মীম’ এক অক্ষর। -তিরমিযী এর দৃষ্টান্ত এই যে, যদি কেউ ‘আলহামদু’ পড়ে, তবে এর পাঁচটি অক্ষরের পঞ্চাশ নেকি পাবে। আল্লাহু আকবার! কত বড় ফযীলত। সুতরাং সামান্য একটু কষ্ট ও পরিশ্রম স্বীকার করে যে এত বড় ফযীলত হাসিল না করবে, তার উপর বড়ই আক্ষেপ। রাসুলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- مَنْ قَرَأَ الْقُرْاٰنَ وَعَمِلَ بِمَا فِيْهِ اُلْبِسَ وَالِدَاهٗ تَاجًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ ضَوْءُهٗ اَحْسَنُ مِنْ ضَوْءِ الشَّمْسِ فِىْ بُيُوْتِ الدُّنْيَا لَوْ كَانَتْ فِيْكُمْ فَمَاظَنُّكُمْ بِالَّذِىْ عَمِلَ بِهٰذَا. ‘যে ব্যক্তি কুরআন শরীফ পড়েছে এবং উহার হুকুমের উপর আমল করেছে, তার মাতা-পিতাকে কিয়ামতের দিন এমন একটি তাজ (মুকুট) পরান হবে, যার আলোক সূর্যের আলোক হতে অধিকতর উজ্জল হবে- যে আলোক দুনিয়াতে যে সূর্য যখন তোমাদের মধ্যে আসে, তখন তোমাদের ঘরের মধ্যে হয় অর্থাৎ, সূর্য যখন কাছে আসে, তখন তোমাদের ঘরের মধ্যে কত আলো হয়, সেই তাজের আলো ইহা অপেক্ষাও অধিক হবে। যখন মাতা-পিতার এত বড় মর্তবা হবে, তখন যে ব্যক্তি স্বয়ং কুরআন শরীফ পড়বে ও তদনুযায়ী আমল করবে, তার সম্বন্ধে তোমাদের কি ধারণা? অর্থাৎ, তার মর্তবা অসীম ও অতুলনীয়।’ ছেলে-মেয়েদেরকে যদি সময়াভাবে সম্পূর্ণ কুরআন শরীফ শিক্ষা না-ও দেওয়া যায়, তবে (পারা বা সূরা) যতটুকু হউক না কেন, তাই শিক্ষা দেওয়া নেহায়েত দরকার। যদি হিফজ করতে পারে, তবে তো অফুরন্ত ফযীলত। অনেক মুসলমান নিজের সন্তানকে দ্বীনি শিক্ষার পরিবর্তে জাগতিক শিক্ষা দেওয়াটা অধিক গুরুত্ব ও গৌরবের বিষয় মনে করে। শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে কুরআন সহীহ-শুদ্ধতার প্রতি লক্ষ্য করা হয় না, একই সাথে কুরআনের প্রতি আদবের শিক্ষার বিষয়টিও গুরুত্বহীন। বর্তমানে মুসলমানদের ঘর ও মসজিদ তিলাওয়াত শূন্য হয়ে গেছে। গুনাহের আসবাব দ্বারা ঘর, দোকান-পাট ভরে গেছে। একসময় মুসলমানদের ঘর-বাড়ি থেকে কুরআন তিলাওয়াতের আওয়াজ আসত। সেখান থেকে এখন আসছে গান-বাদ্যের আওয়াজ। ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতি ও বরকতের জন্য কুরআন মাজীদের তিলাওয়াত করা হতো। এখন দোকান-পাটে টি.ভি. ও ভি. সি.ডি. এবং বাদ্য-বাজনার মাধ্যমে উন্নতি কামনা করা হয়। মসজিদে কুরআন মাজীদ থাকলে তা তালাবদ্ধ আলমারিতে রাখা হয়। অনেক স্থানে শুধু ব্যবস্থাপনার কারণে তিলাওয়াতের সুযোগ হয় না। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, মসজিদে বা ঘরে কুরআনকে ধরা ছোঁয়ার কেউ নেই। অথচ মসজিদে কুরআন তিলাওয়াতের ফযীলত সম্পর্কে হযরত উকবা ইবনে আমের রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- আমরা মসজিদে নববীর সুফ্ফায় বসা ছিলাম। এমন সময় নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাশরীফ আনলেন এবং বললেন, তোমাদের মধ্যে কে ইহা পছন্দ কর যে, সকাল বেলা বতহান বা আকীক নামক বাজারে যেয়ে কোন রকম গোনাহ ও আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন না করে দু’টি অতি উত্তম উটনী নিয়ে আসবে? সাহাবায়ে কেরাম রাযি. আরজ করলেন, ইহা তো আমাদের সকলেই পছন্দ করবে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, মসজিদে গিয়ে দু’টি আয়াত পড়া বা দু’টি আয়াত শিক্ষা দেওয়া দু’টি উটনী হতে এবং তিনটি আয়াত তিনটি উটনী হতে এমনিভাবে চারটি আয়াত চারটি উটনী হতে উত্তম এবং ঐগুলোর সমপরিমাণ উট হতে উত্তম। -মুসলীম, আবু দাউদ রাসুলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- مَنْ قَرَأَ الْقُرْاٰنَ فَاسْتَظْهَرَهٗ فَاَحَلَّ حَلَالَهٗ وَحَرَّمَ حَرَامَهٗ اَدْخَلَهُ اللهُ الْجَنَّةَ وَشَفَّعَهُ فِىْ عَشَرَةٍ مِّنْ اَهْلِ بَيْتِهِ كُلُّهُمْ قَدْ وَجَبَتْ لَهٗ النَّارَ ‘যে ব্যক্তি কুরআন শরীফ পড়বে এবং তা হিফজ করবে এবং তার হালালকৃতকে হালাল ও হারামকৃতকে হারাম জেনে চলবে, (অর্থাৎ, কুরআনের খেলাফ যেন কোনো আকীদা না হয়। উপরে আমলের কথা বলা হয়েছিল, এখানে আকীদার কথা বলা হলো।) আল্লাহ তাকে বেহেশতে স্থান দিবেন এবং তার আত্মীয়বর্গের মধ্য হতে দশজন লোকের জন্য তার সুপারিশ গ্রহণ করবেন যাদের জন্য দোযখ সাব্যস্ত হয়ে ছিল।’ -তিরমিযী এই হাদীসে কুরআন শরীফ হিফজ করার ফযীলত আরো বেশী বর্ণনা করা হয়েছে। আর আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে সর্বাপেক্ষা নিকটবর্তী মা-বাবা। অতএব, মা বাবার জন্য যে সুপারিশ ও বখশিশ হবে, তাতে কোনোই সন্দেহ নাই। নিজের ছেলেকে হাফেজ বানাবে যে কত বড় ফযীলত তা এই হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয়। রাসুলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- اِنَّ هٰذِهِ الْقُلُوْبَ تَصْدَءُ كَمَا يَصْدَءُ الْحَدِيْدُ اِذَا اَصَابَهُ الْمَاءُ قِيْلَ يَا رَسُوْلَ اللهِ! وَمَا جِلَائُهَا؟ قَالَ كَثْرَةُ ذِكْرِ الْمَوْتِ وَتِلَاوَةِ الْقُرْاٰنِ. بيهقى ‘পানি লাগলে লোহায় যেরূপ মরিচা ধরে, সেই রকম মানুষের দিলেও মরিচা ধরে। (মজলিস হতে) আরজ করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! সেই জিনিস কি যাদ্বারা দিলকে সাফ করা যায়? রাসুলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দিলেন, মৃত্যুকে বেশী স্মরণ করলে এবং কুরআন শরীফ পড়তে থাকলে। (দিল সাফ থাকে, মরিচা ধরে না)।’ -বায়হাকী وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُوْلُ اللهِ ﷺ وَنَحْنُ نَقْرَأُ الْقُرْاٰنَ وَفِيْنَا الْعَرَبِىُّ وَالْعَجَمِىُّ فَقَالَ اقْرَؤُوْا فَكُلٌّ حَسَنٌ ‘হযরত জাবের রাযি. হতে বর্ণিত আছে যে, একবার রাসুলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট এমতাবস্থায় তাশরীফ আনলেন, যখন আমরা কুরআন শরীফ পাঠ করছিলাম, তখন আমাদের মধ্যে পাড়াগাঁয়ের লোকও ছিল। (আমাদের মধ্যে কেউ কেউ আরবী লোক ছিল, তারা কুরআন শরীফ শুদ্ধভাবে পড়তে পারত, আর কয়েকজন পাড়াগাঁয়ের লোকও ছিল, যারা শুদ্ধভাবে কুরআন শরীফ পড়তে পারত না।) হযরত বললেন, পড়তে থাক, সবই ভাল।’ অর্থাৎ চেষ্টা করতে থাক যদি তা সত্তে¡ও ভালো পড়তে না পার তাতে মন ছোট করো না, আর যারা ভালো পড়তে পারে, তারা যেন তোমাদেরকে ঘৃণা না করে। (আল্লাহ তা‘আলা দিল দেখেন।) একথা দ্বারা বুঝা গেল যে, ‘জবান (মুখ) সাফ নয় বা বয়স বেশি হয়ে গিয়েছে, এমতাবস্থায় সহীহ করে (শুদ্ধ করে) পড়তে পারা যাবে না, সুতরাং সওয়াব কি হবে? বরং গোনাহ (পাপ) হওয়ার সম্ভাবনা আছে।’ এমন মনে করা উচিত নয়। বরং রাসুলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকলকে সান্তনা দিয়ে পড়তে বললেন। মিশকাত শরীফে আছে- مَنِ اسْتَمَعَ اِلٰى اٰيَةٍ مِنْ كِتَابِ اللهِ كَتَبَتْ لَهٗ حَسَنَةٌ مُّضَاعَفَةٌ وَمَنْ تَلَاهَا كَانَتْ لَهٗ نُوْرًا يَّوْمَ الْقِيَامَةِ ‘যে ব্যক্তি কুরআন শরীফের একটি আয়াত শুনার জন্যও কান লাগাবে অর্থাৎ মনোযোগের সাথে শুনবে, তাকে এমন একটি নেকি (পূণ্য) দেওয়া হবে, যা সর্বদা বৃদ্ধি পেতে থাকবে। (কতদূর যে বাড়বে তার কোন সীমা নির্দেশ করেন নাই। অতএব, আল্লাহ তা‘আলার রহমতের দরবারে আশা করা যায় যে, ইহা ধারণাতীত বাড়বে।) আর যে ব্যক্তি সে আয়াতটি পাঠ করবে, তার জন্য সেই আয়াতটি কিয়ামতের দিবসে একটি উজ্জল নূর হবে।’ আহমদ কুরআন শরীফ কত বরকতের জিনিস। যদি নিজে পড়তে না পারে, তবে কোনো কুরআন পাঠকের পড়ার দিকে কান লাগিয়ে শুনলেও বিশেষ সওয়াব পাওয়া যায়। হে আল্লাহর বান্দা! ইহা তো কিছুই কঠিন নয়। (এখনও জাগ, আখেরাতের জন্য একটু চিন্তা কর, অলস্য নিদ্রা পরিত্যাগ কর, আর ঘুমে বিভোর থেকো না।) রাসুলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- اِقْرَؤُوْا الْقُرْاٰنَ فَاِنَّهٗ يَأْتِىْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ شَفِيْعًا لِّاَصْحَابِه – مسلم ‘(হে আমার উম্মতগণ!) তোমরা কুরআন শরীফ সর্বদা তিলাওয়াত করতে থাক; কেননা যারা কুরআন শরীফ সর্বদা তিলাওয়াত করবে, কিয়ামতের দিন কুরআন শরীফ তাদের জন্য সুপারিশ করবে (তাদেরকে দোযখ হতে বাঁচিয়ে দিবে)। রাসুলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন- يَجِيْئُ صَاحِبُ الْقُرْاٰنِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيَقُوْلُ الْقُرْاٰنُ يَا رَبِّ حَلِّه فَيُلْبَسُ تَاجُ الْكَرَامَةِ ثُمَّ يَقُوْلُ يَا رَبِّ زِدْهُ فَيُلْبَسُ حُلَّةُ الْكَرَامَةِ ثُمَّ يَقُوْلُ يَارَبِّ اِرْضَ عَنْهٗ فَيُرْضٰى عَنْهُ فَيُقَالُ اِقْرَأْ وَارْقَ وَيَزْدَادُ بِكُلِّ اٰيَةٍ حَسَنَةٌ- ترمذى কুরআন শরীফ পাঠকারীগণ কিয়ামতের দিবসে যখন আল্লাহর দরবারে আসবে, তখন কুরআন শরীফ বলবে, ‘হে আল্লাহ! তাদেরকে সম্মানের লেবাস পরিধান করান। অতঃপর তাদেরকে বড় সম্মানের তাজ পরান হবে। অতঃপর কুরআন শরীফ পুনরায় বলবে, ‘হে আল্লাহ! তাদেরকে আরো দিন।’ তখন তাদেরকে আরো সম্মানের লেবাস পরান হবে। পুনরায় কুরআন শরীফ বলবে, ‘হে আল্লাহ! আপনি তাদের উপর চিরকালের জন্য সন্তুষ্ট হয়ে যান।’ অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাদের উপর চিরকালের জন্য সন্তুষ্ট হয়ে যাবেন এবং বলবেন: ‘কুরআন শরীফের এক একটি আয়াত পাঠ করো এবং এক একটি উচ্চ দর্জায় আরোহণ করতে থাক।’ অন্য এক হাদীসে এই পড়া এবং উপরের দর্জায় চড়ার বিস্তৃত বর্ণনা এসেছে। যা এরূপ: ‘যে ভাবে দুনিয়াতে তারতীলের সাথে পড়তে সেই রকম পড়তে ও চড়তে থাকো; যে আয়াতে গিয়ে তোমার পড়া শেষ হবে সেখানেই তোমার থাকার স্থান।’ হে মুসলমানগণ! এই সকল হাদীস খুব চিন্তার সাথে পাঠ করুন। কুরআন শরীফ অমূল্য রত্ন , যত্নের সাথে শিক্ষা লাভ করুন এবং নিজের ছেলে-মেয়েদেরকেও শিক্ষা দিতে চেষ্টা করুন। যদি সহীহ করে পড়তে না পারা যায়, তবে ঘাবরানোর কোনো কারণ নাই। চেষ্টা করতে থাকলেও বহু সওয়াব পাওয়া যাবে। যদি হিফজ (কণ্ঠস্থ) না হয়, তবে দেখে দেখে পড়তে ও পড়াতে থাকবে। তাতে অনেক ফযীলত হাসিল হবে। যদি সম্পূর্ণ কুরআন শরীফ পাঠ শিক্ষা লাভ করার সময় ও সুযোগ না ঘটে, তবে যারা সম্পূর্ণ কুরআন শিক্ষা লাভ করেছেন তাদের নিকট বসে শুনলেও অনেক সওয়াব পাওয়া যাবে। সকলেরই জানা আছে যে, যে সকল কাজ অত্যন্ত দরকারী তা করাতে সওয়াব পাওয়া যায়, অথচ তা হাসিল করার উপায়গুলি অর্জন করা যেমন জরূরী বা দরকারী, তেমন তাতে অফুরন্ত সওয়াবও নিহিত আছে। অতএব, কুরআন শরীফ শিক্ষার বন্দোবস্ত করাও নেহায়েত জরূরী এবং তাতে অশেষ সওয়াব আছে। প্রতি গ্রামে মুসলমান ভাইগণ মিলিতভাবে চেষ্টা করবেন, যাতে গ্রামে গ্রামে, মহল্লায় মহল্লায় কুরআন শরীফ শিক্ষার জন্য মক্তব স্থাপিত হয়। সেই মক্তবে ছেলে-মেয়েদের প্রাথমিক শিক্ষার বন্দোবস্ত করা একান্ত দরকার। বয়স্কদেরও কুরআন শরীফ শিক্ষার জন্য কিছু সময় বের করতে হবে। দুনিয়ার সমস্ত কাজ-কর্মের জন্য সময় মিলে, আর আল্লাহর কালাম কুরআন শরীফ শিক্ষার জন্য সময় মিলবে না? শিক্ষক যদি বিনা বেতনে পাওয়া যায়, তবে ভালই। নতুবা সকলে মিলে চাঁদা করে শিক্ষকের জীবিকা নির্বাহের যোগ্য কিছু সম্বল সংগ্রহ করে দেওয়া দরকার। যে সমস্ত ছেলেরা দারিদ্রতার কারণে সম্পূর্ণ কুরআন শরীফ পড়তে পারে না, তাদের খাওয়া-পরার ব্যবস্থা করে দেওয়া আবশ্যক। এই প্রথা বাংলাদেশ ব্যতীত অন্যান্য ইসলামী দেশে এখনও প্রচলিত আছে, যেমন- দেওবন্দ, সাহারানপুর, থানাভবন এবং অন্যান্য মাদরাসায় ছাত্রগণ নিশ্চিন্ত হয়ে সম্পূর্ণ কুরআন শরীফ শিক্ষা করতে পারে। আর ছেলেরা মক্তবে যতটুকু শিক্ষা করবে, ততটুকু তারা বাড়ীর মেয়েদেরকে শিক্ষা দিলে স্ত্রী-পুরুষ সকলেই কুরআন শরীফ শিক্ষা করতে পারে। যদি কেউ আমপাড়া দেখে পড়তে না পারে, তবে অন্ততপক্ষে কিছু সংখ্যক সূরা মুখস্ত পড়ে নেওয়া আবশ্যক। কুরআনে কারীমের প্রতি ইমামে আ‘জমের আযমত আবু হানীফা রহ. ইজতিহাদে সবচেয়ে বড় ও বিজ্ঞ ইমাম ছিলেন। এ কারণে তাকে ‘ইমামে আযম’ বলা হয়। তিনি কুরআন শরীফের বড় আশেক ছিলেন। ছিলেন কুরআনী জ্ঞানের মহাপÐিত। কুরআন ও হাদীসের আলোকে ফিক্হের প্রবর্তন করেছেন। তিনি অত্যন্ত খোদাভীরু ও কোমল হৃদয়ের অধীকারী ছিলেন। ইলম ও আলেমদের তিনি খুবই সম্মান করতেন। কুরআন শরীফের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের প্রতি আন্তরিক অনুভব করতেন। তাদের প্রতি ছিল তার ঐকান্তিক ভালোবাসা। তাঁদেরকে খুশি করার জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকতেন। তাঁদের সেবায় থাকতেন উৎসর্গিত। একদিনের ঘটনা। তাঁর ছেলে যেদিন শিক্ষকের নিকট পবিত্র কুরআনের সবক শুরু করল, সেদিন তিনি ছেলের শিক্ষকের খেদমতে পাঁচ হাজার দিরহাম (রৌপ্য মুদ্রা) উপঢৌকন স্বরূপ পেশ করলেন। এরপর যেদিন তাঁর ছেলে সূরা ফাতিহা শেষ করল, সে দিনও তিনি শিক্ষকের খিদমতে পাঁচ হাজার দেরহাম হাদিয়া স্বরূপ পেশ করলেন এবং অতি ন¤্রতা ও বিনয়ের সঙ্গে আরয করলেন, “আল্লাহর কসম, যদি আমার নিকট এর চেয়েও বেশি দেরহাম থাকত, তবে অবশ্যই তাও আপনার খেদমতে পেশ করতাম।”"

2

আল্লাহর বাণী ‘আল-কুরআনুল কারীম’-এর সাথে বান্দার আদব

"মুসলিম ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলার বাণী এবং সকল বাণীর উপর তাঁর বাণীর সম্মান ও মর্যাদায় বিশ্বাস করে। আরও মনে করে, যে ব্যক্তি কুরআন দ্বারা কথা বলে, সে সত্য বলে; আর যে ব্যক্তি তাঁর দ্বারা বিচার ফয়সালা করে, সে ন্যায়বিচার করে; আর তাঁর ধারক-বাহকগণ আল্লাহর পরিবার ও তাঁর নিকটতম বিশেষ ব্যক্তিবর্গ; আর তাঁকে যারা আকড়ে ধরবে, তারা নাজাতপ্রাপ্ত সফলকাম; আর যারা তাঁকে পরিহার করে চলে, তারা ধ্বংসপ্রাপ্ত চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। আর আল্লাহ তা‘আলার কিতাবের মহত্ব, পবিত্রতা ও শ্রেষ্ঠত্বের কারণে মুসলিম ব্যক্তির ঈমানে আরও বৃদ্ধি ঘটাবে, যা বর্ণিত হয়েছে ওহী’র ধারক সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ আমাদের নেতা মুহাম্মদ ইবন আবদিল্লাহ- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট থেকে; যেমন— তিনি বলেন: « اقْرَءُوا الْقُرْآنَ فَإِنَّهُ يَأْتِى يَوْمَ الْقِيَامَةِ شَفِيعًا لأَصْحَابِهِ » . (أخرجه مسلم) . “তোমরা কুরআন তিলাওয়াত কর; কেননা, কিয়ামতের দিন তা তিলাওয়াতকারীদের জন্য সুপারীশকারীরূপে উপস্থিত হবে।”[1] তিনি আরও বলেন: « خَيْركُمْ مَنْ تَعَلَّمَ الْقُرْآن وَعَلَّمَهُ » . (أخرجه البخاري) . “তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তিই সর্বোত্তম, যে আল-কুরআনের শিক্ষা লাভ করে এবং তা অন্যকে শিক্ষা দেয়।”[2] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন: « أَهْلُ الْقُرْآنِ هُمْ أَهْلُ اللَّهِ وَخَاصَّتُهُ » . (رواه النسائي و ابن ماجه و أحمد و الحاكم). “আল-কুআনের ধারক-বাহকগণ আল্লাহর পরিবার ও তাঁর নিকটতম বিশেষ ব্যক্তিবর্গ।”[3] তিনি আরও বলেন: « إن القلوبَ تصدأ كما يصدأ الحديدُ ، فقيل : يا رسول الله ! وما جلاؤها ؟ فقال: تلاوةُ القرآن ، وذكرُ الموتِ » . (رواه البيهقي). “অন্তর মরিচাযুক্ত হয়, যেমনিভাবে লোহতে মরিচা পড়ে; অতঃপর জিজ্ঞাসা করা হল: হে আল্লাহর রাসূল! তা দূর করার উপায় কী? জবাবে তিনি বললেন: কুরআন তিলাওয়াত করা এবং মুত্যুর কথা স্মরণ করা।”[4] আরেক বার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে চরমভাবে ঝগড়াকারীদের কোনো একজন তাঁর নিকট এসে বলল: হে মুহাম্মাদ! তুমি আমার নিকট কুরআন তিলাওয়াত কর, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঠ করেন: ﴿ ۞إِنَّ ٱللَّهَ يَأۡمُرُ بِٱلۡعَدۡلِ وَٱلۡإِحۡسَٰنِ وَإِيتَآيِٕ ذِي ٱلۡقُرۡبَىٰ وَيَنۡهَىٰ عَنِ ٱلۡفَحۡشَآءِ وَٱلۡمُنكَرِ وَٱلۡبَغۡيِۚ يَعِظُكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَذَكَّرُونَ ٩٠ ﴾ [النحل: ٩٠] “আল্লাহ ন্যায়পরায়ণতা, সদাচারণ ও আত্মীয়-স্বজনকে দানের নির্দেশ দেন এবং তিনি নিষেধ করেন অশ্লীলতা, অসৎকাজ ও সীমালংঘ করতে; তিনি তোমাদেরকে উপদেশ দেন, যাতে তোমরা শিক্ষা গ্রহণ কর।”[5] আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিলাওয়াত করে শেষ করতে না করতেই প্রচণ্ড ঝগড়াটে ব্যক্তি তাঁর শব্দের মহত্বে ও অর্থের পবিত্রতায় বিস্মিত হয়ে, তার স্পষ্টতায় আক্রান্ত হয়ে এবং প্রভাবিত করার শক্তিতে আকৃষ্ট হয়ে তা পুনরায় তিলাওয়াত করার আবেদন করল; আর সে দেরি করেনি আল্লাহর বাণীর পবিত্রতা ও মহত্বের ব্যাপারে স্বীকৃতি ও সাক্ষ্য প্রদান করতে; কেননা, সে এক বাক্যে বলে ফেলল: والله ، إنَّ لَه لحلاوةً ، وإنّ عَليه لطَلاوَة ، وإنّ أسفَلَه لمورِقٌ ، وإنَّ أعلاَه لمثمِر ، وما يقول هذا بشر “আল্লাহর কসম! নিশ্চয়ই তার মধুরতা রয়েছে, রয়েছে তার সৌন্দর্য ও উজ্জ্বলতা, তার নীচের অংশ সবুজ-শ্যামল এবং উপরের অংশ ফলদায়ক; আর এটা কোনো মানুষের কথা নয়!।”[6] আর এ জন্য মুসলিম ব্যক্তি তাঁর প্রতি বিশ্বাস করার পাশাপাশি তার হালাল বিষয়কে হালাল মনে করে, তার হারাম বিষয়কে হারাম মনে করে, তার আদবসমূহ যথাযথভাবে পালন করে এবং তার চারিত্রিক ও নৈতিক বিষয়সমূহকে স্বীয় চরিত্র বলে গ্রহণ করে; সুতরাং সে আল-কুরআন তিলাওয়াত করার সময় নিম্নোক্ত আদবসমূহ রক্ষা করে চলবে: ১. অবস্থার পরিপূর্ণতা নিশ্চিত করে পবিত্রতাসহ কিবলামুখী হয়ে আদব ও সম্মানের সাথে বসে কুরআন পাঠ করা। ২. ধীরস্থিরভাবে কুরআন তিলাওয়াত করা এবং এ ক্ষেত্রে তাড়াহুরা না করা; সুতরাং কমপক্ষে তিন দিনের কমে কুরআন খতম করবে না; কেননা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: « مَنْ قَرَأَ الْقُرْآنَ فِي أَقَلَّ مِنْ ثَلَاثٍ لَمْ يَفْقَهْهُ » . (رواه أصحاب السنن و أحمد) . “যে ব্যক্তি তিন দিনের কম সময়ের মধ্যে আল-কুরআন পাঠ করে শেষ করে, সে ব্যক্তি তা বুঝতে পারেনি।”[7] আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবদুল্লাহ ইবন ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা প্রতি সপ্তাহে কুরআন খতম করার নির্দেশ দিয়েছেন।[8] যেমন আবদুল্লাহ ইবন মাস‘উদ, উসমান ইবন ‘আফ্ফান ও যায়েদ ইবন সাবেত রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম প্রতি সপ্তাহে একবার কুরআন খতম করতেন।[9] ৩. কুরআন তিলাওয়াতের সময় বিনয়ী ও ভীতশ্রদ্ধ হওয়া এবং দুঃখ প্রকাশ করা; আর ক্রন্দন করা, অথবা কাঁদতে না পারলে কাঁদার ভান করা; কেননা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: « اتْلُوُا الْقُرْآنَ وَابْكُوْا ، فَإِنْ لَمْ تَبْكُوا فَتَبَاكَوْا » . (رواه ابن ماجه). “তোমরা কুরআন তিলাওয়াত কর এবং ক্রন্দন করো; আর যদি কাঁদতে না পারো, তাহলে কাঁদার ভান কর।”[10] ৪. মধুর সুরে কুরআন তিলাওয়াত করা; কেননা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: « زَيِّنُوا الْقُرْآنَ بِأَصْوَاتِكُمْ » . (رواه أحمد و ابن ماجه و النسائي و الحاكم). “তোমরা সুন্দর কণ্ঠে কুরআন তিলাওয়াত কর।”[11] তিনি আরও বলেন: « لَيْسَ مِنَّا مَنْ لَمْ يَتَغَنَّ بِالْقُرْآنِ » . (رواه البخاري) . “যে ব্যক্তি ভাল আওয়াজে কুরআন পড়ে না, সে আমাদের দলভুক্ত নয়।”[12] তিনি আরও বলেন: « ما أذِنَ اللهُ لشيءٍ ما أَذِنَ لِنَبيٍّ أنْ يتَغنَّى بالقُرآن » . (متفق عليه) . “আল্লাহ তা‘আলা তাঁর কোনো এক নবী থেকে (মধুময় সুরে) যেভাবে কুরআন শ্রবণ করেছেন, সেভাবে আর কিছুই তিনি শুনেননি।”[13] ৫. গোপনে তিলাওয়াত করা, যদি সে তার নিজের ব্যাপারে প্রদর্শনী বা সুখ্যাতি ছড়ানোর আশঙ্কা করে অথবা তার দ্বারা সালাত আদায়কারীর সালাত আদায়ে বিঘ্ন ঘটে; কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: « الْجَاهِرُ بِالْقُرْآنِ كَالْجَاهِرِ بِالصَّدَقَةِ » . (رواه أبو داود و الترمذي). “আল-কুরআনের মাধ্যমে নিজেকে প্রচারকারী ঐ ব্যক্তির মত, যে সাদকা করার মাধ্যমে নিজেকে প্রচার করে বেড়ায়।”[14] উল্লেখ্য যে, গোপনে সাদকা করাই উত্তম, কিন্তু প্রকাশ করার মধ্যে নির্দিষ্ট কেনো ফায়দা থাকলে ভিন্ন কথা, যেমন— মানুষকে সাদকা করার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করার জন্য প্রকাশ্যে সাদকা করা; আর কুরআন তিলাওয়াতের বিষয়টিও অনুরূপ। ৬. তাঁর প্রতি ভক্তি, শ্রদ্ধা ও মনোযোগসহ চিন্তা ও গবেষণার সাথে তা তিলাওয়াত করা এবং তাঁর অর্থ ও তাৎপর্য অনুধাবন করা। ৭. কুরআন তিলাওয়াতের সময় তাঁর ব্যাপারে অমনোযোগী এবং তাঁর বিরোধী না হওয়া; কারণ, এমনটি করলে নিজেই নিজের অভিশাপের কারণ হবে; কেননা, সে যদি পাঠ করে: لَّعۡنَتَ ٱللَّهِ عَلَى ٱلۡكَٰذِبِينَ (মিথ্যাবাদীদের উপর আল্লাহর লা‘নত)।[15] অথবা পাঠ করে: أَلَا لَعۡنَةُ ٱللَّهِ عَلَى ٱلظَّٰلِمِينَ (সাবধান! আল্লাহর লা‘নত যালিমদের উপর)[16] এবং নিজে যদি মিথ্যাবাদী বা যালিম হয়, তাহলে সে নিজেকে নিজে অভিশাপ বা লা‘নতকারী বলে গণ্য হবে। আর নিম্নোক্ত বর্ণনাটি আল্লাহর কিতাব থেকে মুখ ফিরেয়ে নেয়া গাফিল ব্যক্তিগণের ভুলের পরিমাণ সম্পর্কে সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করে দিয়েছে; বর্ণিত আছে: “তাওরাত কিতাবে এসেছে যে, আল্লাহ তা‘আলা বলেন: তুমি কি আমাকে লজ্জা পাও, তোমার কোনো ভাইয়ের নিকট থেকে তোমার কাছে একটি গ্রন্থ আসে এমতাবস্থায় যে, তুমি রাস্তার মধ্যে হাঁটছ, তারপর তুমি সে বইটির কারণে রাস্তা ছেড়ে দিয়ে বসে পড়ছ, তারপর তা পাঠ করছ এবং তা নিয়ে অক্ষরে অক্ষরে গবেষণা করছ, এমনকি তার কোনো কিছুই তোমার কাছ থেকে বাদ যায় না; আর এটা আমার কিতাব, যা আমি তোমার প্রতি নাযিল করেছি, তুমি লক্ষ্য কর তো, তোমার জন্য আমি তাতে কথাগুলো কিভাবে পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করে দিয়েছি, আর তাতে কতবার আমি তার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ নিয়ে চিন্তাভাবনা করার জন্য তোমাকে তাগিদ দিয়েছি, তারপর তুমি তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে, সুতরাং আমি তোমার তথাকথিত ভাইদের কারো কারো চেয়ে অনেক বেশি দুর্বল, তাই না ? হে আমার বান্দা! তোমার কোনো ভাই তোমার নিকট এসে বসে, তারপর তুমি একেবারে তার মুখোমুখি হয়ে বসে যাও এবং তোমার ষোলআনা মন দিয়ে কান পেতে তার কথা শ্রবণ করতে থাক, তারপর কোনো কথক যদি কথা বলে অথবা তার কথা শুনার সময় কেউ তোমাকে বিরক্ত করে, তাহলে তুমি তার দিকে ইশারা করে বলো যে, তুমি থাম বা চুপ কর; আর আমি তোমার কাছে এসে তোমার সাথে কথা বলি, অথচ তুমি মন- দিল দিয়ে সচেতনভাবে আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও; সুতরাং তুমি কি তোমার ভাইদের কারো কারো চেয়ে আমাকে তোমার নিকটে সবচেয়ে বেশি দুর্বল বলে ধারণা করেছ?![17] ৮. আল-কুরআনের ধারক ও বাহকগণ তথা আল্লাহর পরিবার ও তাঁর বিশেষ ব্যক্তিবর্গের গুণাবলী দ্বারা গুণান্বিত হওয়ার এবং তাদের বৈশিষ্ট্যের দ্বারা বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত হওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করা; যেমনটি আবদুল্লাহ ইবন মাস‘উদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেছেন: « ينبغي لقارئ القرآن أن يُعْرَف بليله إذ الناس نائمون , وبنهاره إذ الناس مُفْطِرون , وببكائه إذ الناس يضحكون , وبورعه إذ الناس يخلطون ، وبصمته إذ الناس يخوضون , وبخشوعه إذ الناس يختالون , وبحزنه إذ الناس يفرحون » . “আল-কুরআনের পাঠককে এমন হতে হবে যে, তাকে রাতের বেলায় চেনা যাবে, যখন জনগণ ঘুমিয়ে থাকবে, আর দিনের বেলায় চেনা যাবে, যখন জনগণ সাওম পালন না করে পানাহার করবে; আর তাকে চেনা যাবে তাঁর ক্রন্দন দ্বারা, যখন জনগণ হাসবে; আর তাকে চেনা যাবে তার ‘তাকওয়া’ এর দ্বারা, যখন জনগণ পরস্পর মিশে যাবে এবং তাকে চেনা যাবে তার মৌনতার দ্বারা, যখন জনগণ কথাবার্তায় নিমগ্ন হবে; আর তাকে চেনা যাবে তার নম্রতা দ্বারা, যখন জনগণ গর্ব-অহঙ্কার করবে এবং তাকে চেনা যাবে তার দুঃখ-কষ্টের দ্বারা, যখন জনগণ আনন্দ প্রকাশ করবে।”[18] আর মুহাম্মাদ ইবন কা‘ব বলেন: আমরা আল-কুরআনের পাঠককে চিনতাম তার ফেকাশে বর্ণের চেহারার দ্বারা; তিনি এর দ্বারা তার রাত্রি জাগরণ ও দীর্ঘ সময় ধরে তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করার দিকে ইঙ্গিত করেছেন। আর ওহাইব ইবনুল ওয়ারদ বলেন: জনৈক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করা হলো তুমি কি ঘুমাও না? জবাবে সে বলল: আল-কুরআনের বিস্ময়কর দিকগুলো আমার ঘুমকে ঘেরাও করে রেখেছে।[19] আর যূন নূন আল-মিসরী আবৃত্তি করে বলেন: منع القرآن بوعده ووعيده مُقَل العيون بليلها لا تهجَعُ (আল-কুরআন তাঁর প্রতিশ্রুতি ও হুমকির দ্বারা বারণ করে অক্ষিগোলককে তার রাতের বেলায়— তুমি ঘুমাবে না)। فهموا عن الملك العظيم كلامه فهماً تَذِلُّ له الرقابُ وتخضَعُ (তারা মহান অধিপতির বাণী সম্পর্কে এমনভাবে অনুধাবন করে,যে অনুধাবনে তাঁর উদ্দেশ্য তাদের ঘাড় বিনীতভাবে অবনত হয়)।[20]"

"[1] মুসলিম, হাদিস নং- ১৯১০ [2] বুখারী, হাদিস নং- ৪৭৩৯ [3] হাদসটি ইমাম নাসায়ী, ইবনু মাজাহ, আহমাদ ও হাকেম রহ. ‘হাসান’ সনদে বর্ণনা করেছেন। [4] হাদসটি ইমাম বায়হাকী রহ. দুর্বল সনদে বর্ণনা করেছেন। [5] সূরা আন-নাহল, আয়াত: ৯০ [6] ইবনু জারীর আত-তাবারী; আর ঝগড়াটে ব্যক্তিটি হল ওয়ালিদ ইবন মুগীরা, যেমনটি ইমাম বায়হাকী রহ. উত্তম সনদে বর্ণনা করেছেন; আল-গাযালী রহ., ‘এহইয়াউ ‘উলুমিদ্ দীন’, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৭৪ [7] সুনান চতুষ্টয় ও আহমাদ; তিরমিযী রহ. হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন। [8] বুখারী ও মুসলিম। [9] উদ্ধৃত, আবূ বকর আল-জাযায়েরী, মিনহাজুল মুসলিম, পৃ. ১০৯ [10] হাদসটি ইমাম ইবনু মাজাহ রহ. উৎকৃষ্ট সনদে বর্ণনা করেছেন। [11] হাদসটি ইমাম আহমাদ, ইবনু মাজাহ, নাসায়ী ও হাকেম রহ. হাদিসটি বর্ণনা করেছেন এবং তা সহীহ। [12] বুখারী, হাদিস নং- ৭০৮৯ [13] বুখারী, হাদিস নং- ৭০৪৪; মুসলিম, হাদিস নং- ১৮৮১ [14] আবূ দাউদ, হাদিস নং- ১৩৩৫; তিরমিযী, হাদিস নং- ২৯১৯ [15] সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৬১ [16] সূরা হুদ, আয়াত: ১৮ [17] আল-গাযালী রহ., ‘এহইয়াউ ‘উলুমিদ্ দীন’, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৭৫ [18] ‘আখলাকু আহলিল কুরআন’ ( أخلاق أهل القرآن ), ১ম খণ্ড, পৃ. ১০ [19] উদ্ধৃত, আবূ বকর আল-জাযায়েরী, মিনহাজুল মুসলিম, পৃ. ১১১ [20] প্রাগুক্ত, পৃ. ১১১"